এখনকার দিনে ইউনিভার্সিটি এক হিসেবে স্ক্যাম মনে হবে। যদি আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে জাস্ট ক্লাসে চলে যান আর ক্লাস শেষে সোজা বাসায় চলে আসেন। বা বন্ধুদের সাথে একটু চা বিড়ি খেয়ে হ্যাংআউট করে দিন শেষ করে দেন।
কারণ কারিকুলাম নিয়ে এখন সিরিয়াসলি কাজ করার মতো মানুষ খুব কম। একদম হাতের করের মধ্যে গোনা যাবে। যোগ্য মানুষজন সব সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওইপাড়ে চলে যায়। আর কখনো আসে না।
তবে যারাও আছেন, তারা নিজের সবটা দিয়েই করেন।
ইউনিভার্সিটির ফুল টাইম স্টুডেন্ট মানে আপনি ফুল টাইম-ই ইউনিভার্সিটির জন্য খাটবেন। এক বেলা ক্লাস করে এক বেলা চিল করলে আপনি ফুল টাইম স্টুডেন্ট না।
All work and no play!
খালি পড়াশুনা অবশ্যই করবেন না। শুধু বই পড়লে Sheldon এর মতো নার্ড হয়ে যাবেন। দিন দুনিয়া হাস্যকর মনে হবে।
ইউনিভার্সিটির একটা মেজর পার্ট আমার কাছে মনে হয় ক্লাব গুলা। রাজনীতি, স্বজনপ্রীতি সহ হাবিজাবি অনেক ইস্যু ই ক্লাবে থাকে। কিন্তু একেকটা ক্লাব আমার কাছে আমাদের দেশেরই একেকটা টুকরা মনে হয়। এইখানে টিকে থাকতে পারলে, একটা ভালো জায়গায় যেতে পারলে সামনের দিন গুলোতে স্ট্র্যাটেজি বানিয়ে চলতে সাহায্য করে। কারণ সব রকমের নমুনা দেখা এবং তাদের সাথে ডিল করা এই ক্লাবেই শিখে যাবেন।
বিভিন্ন ইভেন্টের লিড দের সাথে কাজ করে বুঝে যাবেন কেমন মানুষের আন্ডারে ফাঁকি দেওয়া যায়, কেমন মানুষের সাথে একদম কুত্তা খাটা খাটতে হয়।
ওপেন ক্রেডিট আর ৩০-৪০ টা করে সেকশনের চক্করে বন্ধু বানানো বা রিলেশনশিপ তৈরি করা এবং টিকিয়ে রাখা অনেক কষ্ট। সেমিস্টার চেঞ্জ হলে রিলেশন চেঞ্জ হওয়া এখন সাধারণ ব্যাপার। এই সমস্যার সমাধানেও ক্লাব হেল্প করে।
তাই একবেলা ক্লাসের প্যারা নিয়ে আরেক বেলা সময় অবশ্যই life skills এর জন্য ক্লাবে দিতে পারেন। ক্লাবের অনুষ্ঠানে ফর্মাল ড্রেসে ছবি তোলা, ওয়াকি টকি নিয়ে ভাব মারা, টুর দেওয়া সহ আরও অনেক সুবিধাই আছে। তবে মোটা দাগে সারা জীবনের জন্য কিছু বন্ধু অবশ্যই পাবেন। কারণ লোহা পুড়েই খাটি হয়। গেঞ্জাম, মান অভিমান, প্রেম ব্রেকআপ সব কিছুর মধ্যে দিয়ে যেয়ে তারপর টিকে গেলেই বন্ধুত্ব খাটি হবে।
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে যেহেতু হল নেই, তাই এই ক্লাবই এক মাত্র ভরসা।
Jargons আর Terminology
ফরমাল এডুকেশনে এমন সব কনসেপ্ট শেখা যায়, যা ওই বয়সে অন্য কোনো পাবলিকলি এভেইলেবল সোর্স থেকে পাওয়া অসম্ভব। ১৯ বছর বয়সে ইংলিশের কোর্স করার সময় আপনাকে রিসার্চ পেপার লেখার ফরম্যাট শিখাবে যেখানে confirmation bias, derivative এই ধরনের শব্দ এবং এর কনসেপ্ট শিখাবে। কোর্স ভেদে cognitive load সহ আরও অনেক ধরনের কনসেপ্ট আসতে পারে যা আপনাকে একটা বিজনেস রান করতে, মানুষ চিনতে, স্ট্র্যাটেজি বানাতে সাহায্য করবে।
Speaking out loud
চিন্তার যে বিশুদ্ধতা আসবে, সেটা এত অল্প বয়সে সেলফ লার্নিং থেকে সম্ভব না। এমনিতেই আমরা এখন ডিভাইস ডিপেনডেন্ট, তার উপর অনলাইন লার্নিং এ আমাদের প্রশ্ন বেশির ভাগ সময় প্রাইভেট থেকে যায়। আবার পাবলিক ডিসকাশনও অনেকে অনেক সময় স্কিপ করে যায় ঠিক মতো না পড়ে। কিন্তু ক্লাস রুমে ডিসকাশন যা হয়, তা আমরা শুনতে বাধ্য। মাঝে মাঝে তর্ক বিতর্ক পর্যন্ত হয়ে যায়। স্টুডেন্ট রা টিচারকে কারেকশনে করে দেয়। এই ফ্যাসিলিটি ইউনিভার্সিটিতে না গেলে পাওয়া সম্ভব না।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.