ওয়ার্ডপ্রেস প্রডাক্ট এর আইডিয়া আগে না মার্কেট আগে?

·

ডিম আগে না মুরগি আগে?

এই প্রশ্নটা অনেকের কাছে কনফিউজিং মনে হয়। কিন্তু আমার কাছে সোজা হিসাব- মুরগি আগে।

ঠিক সেইম ভাবে, যারা ওয়ার্ডপ্রেস মার্কেট এর জন্য প্রডাক্ট বানাচ্ছেন, তাদের জন্য আইডিয়া আগে না মার্কেট আগে, সেই প্রশ্নের উত্তরও আমার কাছে সোজা মনে হয়- মার্কেট আগে।

তবে এখানেও কনফিউজ হওয়ার যায়গা আছে। কারণ অনেকে বলেন ইউজার জানেই না তার আসলে কি দরকার। যেমন লিকুইড সোপ বা হ্যান্ডওয়াশ আসার আগে আমরা জানতাম ই না যে হাত ধোওয়ার জন্য আলাদা সাবানের দরকার আছে। মানে নতুন প্রডাক্টের চাহিদা তৈরি করা।

আবার একজিস্টিং মার্কেটে বেটার ভ্যালু দিয়ে বা আলাদা পজিশনিং নিয়েও খুব ভালো পারফর্ম করা যায়।

আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো ডেভেলপার আছেন। কিন্তু সেই তুলনায় ওয়ার্ডপ্রেস মার্কেট বুঝেন এবং মার্কেটের সাথে এলাইন করে প্রডাক্ট ডেভেলপ করার করার মতো ক্যাপাসিটি আছে, এমন লোক খুবই কম।

ছোট টিম নিয়ে শুরু করতে গেলে আমি সাজেস্ট করি, একজিস্টিং মার্কেটে কাজ করতে। এখান থেকে ডাটা কালেক্ট করা সহজ, মানুষের পেইন পয়েন্ট সহজে খুঁজে বের করা যায় আর রিস্কও কম। কিন্তু একজিস্টিং মার্কেটে কোনভাবেই আইডেন্টিকাল ফিচার সেট নিয়ে প্রডাক্ট শুরু করা উচিত না। যেমন উবার থাকা অবস্থায় পাঠাও কার চলবে না। কারণ উবারের কার সার্ভিস বেস্ট। পাঠাও কার যদি উবারের সাথে কম্পিট করতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাদের আলাদা পজিশনিং এবং ইউনিক ফিচার সেট লাগবে। আর ঠিক কোন ইউনিক ফিচার গুলো দেওয়া প্রয়োজন তা একজন মানুষ ঠাণ্ডা মাথায় ১ সপ্তাহ রিসার্চ করলেও বের করা সম্ভব। নতুন ভ্যালু ক্রিয়েট করা হোক, বা নতুন চাহিদা তৈরি করা হোক, টার্গেট যেটাই থাক, মার্কেট এনালাইসিস সব সময় আগে করতে হবে।

প্রডাক্ট বানানো শেষে মার্কেট ধরার প্ল্যান করতে গেলে সেটা আমার কাছে দেওয়াল ঠেলে সরানোর মতো কঠিন জিনিস মনে হয়। আমার যদি আগে থাকতেই জানা থাকে মানুষ কি নিয়ে সাফার করছে, ঠিক কোন সমস্যার সমাধান আমি করছি, তখন ওই প্রডাক্ট টা লঞ্চ করা এবং ইউজার পাওয়া সহজ হয়ে যায়।

মার্কেট রিসার্চ কোথা থেকে করবো?

১। ওয়ার্ডপ্রেস ফোরামWordPress.org এর সাপোর্ট ফোরামগুলো ডাটা পাওয়ার জন্য খুব ভালো যায়গা। কারণ বাগ রিপোর্ট, ফিচার সাজেশন সব সরাসরি মানুষ অফিশিয়াল ফোরামেই করে থাকে। উকমার্স, বাডিপ্রেস এসবের জন্য এড অন বানানোর আইডিয়া তাদের ফোরাম থেকেই পাবেন।

২। ফেসবুক গ্রুপ – এখন অনেক প্রডাক্ট এর জন্য এবং ইউটিউবারদের ফেসবুক গ্রুপ আছে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত আলোচনা করার জন্য। আবার ডিলস ডিসকাউন্ট এর জন্যও গ্রুপ আছে। কয়েকজনকে রিপ্লাই দিয়ে হেল্প করলে মানুষ আপনাকে চিনলো আর ভবিষ্যতে কোন প্রডাক্ট নিয়ে কথা বললে সেইটার ভ্যালুও থাকলো। সোশ্যাল মার্কেটিং এর জন্য ফেসভ্যালু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে সবার কথা সবাই শুনে না।

৩। ইউটিউব রিভিউ – ইউটিবে ছোট চ্যানেল গুলোরও অনেক ভালো এনগেজমেন্ট থাকে। যে চ্যানেলের মাত্র ৫০০ সাবস্ক্রাইবার, তাকেও হালকা ভাবে নেওয়ার কিছু নেই। কারণ একটা ভিডিওর একটা সিঙ্গেল কমেন্টও আপনার অনেক বড় কাজে লাগতে পারে। সিমিলার প্রডাক্ট এর রিভিউ এর কমেন্ট সেকশন থেকে আইডিয়া পাওয়া অনেক সহজ।

৪। বেটা টেস্টার – প্রডাক্ট একেবারেই ইউনিক হলে এইটা মাস্ট। আর একজিস্টিং মার্কেট হলেও হাইপ তৈরির জন্য এইটা ভালো কাজে লাগে। কারণ অলরেডি যিনি ম্যাগি নুডুলস রেগুলার খাচ্ছেন, তার কাছে বসুন্ধরা নুডুলস বেচা অনেক কঠিন। টেস্ট, কোয়ালিটি যতই ভালো হোক। তখন ফ্রি দিয়ে হোক, ফিউচারে স্পেশাল প্রাইসিং প্রমিস করে হোক, বা আলাদা টাকা দিয়ে হলেও মানুষকে নিজের প্রডাক্ট ইউজ করার জন্য অর্গানাইজ করা জরুরি। নিজে হাজার ডলার খরচ করে এড রান করার চাইতে ৫ জন মানুষ ৫ টা গ্রুপে প্রডাক্ট নিয়ে নিজে থেকে রিভিউ দিলে সেটা বেশি ইফেক্টিভ। আর ওপেন কমিউনিটিতে রেগুলার বা আনপপুলার ইউজারদের পোস্টও অনেক সময় ভালোই রেসপন্স পায়। এইসব ক্ষেত্রে সেলিব্রিটি এন্ডোর্সমেন্ট না থাকলেও সমস্যা হয়না।

আমি পার্সোনালি সেলিব্রিটি এন্ডোর্সমেন্ট বা পেইড রিভিউ এভয়েড করার চেষ্টা করি। আমি নিজে খুব কমই টাকা খরচ করে প্রডাক্ট লঞ্চ করেছি। ওয়ার্ডপ্রেস নিজে যেহেতু কমিউনিটি বেজড প্রডাক্ট, এই কমিউনিটি-ই এর আসল পাওয়ার সোর্স। কমিউনিটিতে সহজে মিশতে পারলে, বুঝতে পারলে প্রডাক্ট মার্কেটিং নিয়ে টেনশন করতে হবে না।

পেইড এডভার্টাইজমেন্ট স্কেলিং এর জন্য কাজে লাগে। ১০ টাকাকে ২০ টাকা বানাতে সাহায্য করবে। বাট শূন্যকে ১০ এ নিতে খুব বেশি হেল্প করতে দেখিনি।

Comments

Leave a Reply